অফিস চলাকালীন সময়ে দূতাবাসে নিয়মিত যোগাযোগের নম্বর দু'টি  +39 06 8079541, +39 06 8083595  (ছুটির দিন ব্যতিত)। তবে, দূতাবাসের সার্বক্ষণিক পাইলট/জরুরী নম্বর দু'টি 351 102 6825, 351 176 6537 - ছুটির দিনসহ ২৪ ঘন্টা (24/7) চালু রয়েছে। শুধুমাত্র অতীব জরুরী প্রয়োজনে এ নম্বরে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, পাসপোর্ট / কন্স্যুলার ও অন্যান্য রুটিন দৈনন্দিন অনুসন্ধান (query)/ এপয়েন্টমেন্ট গ্রহনের জন্য এই পাইলট/জরুরী নম্বর প্রযোজ্য নয়।


Title
উৎসবের আমেজে ইতালিতে বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালিত
Details

ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস ৩০ জুন ২০২১ বাংলা নববর্ষ ১৪২৮, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৭তম এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্ম বার্ষিকী উদযাপন করে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসানের স্বাগত বক্তব্যের পরে ছিল বাংলা নববর্ষ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উপর বিশেষজ্ঞ আলোচক (Designated Discussant) ও কম্যুনিটি নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে আলোচনা, দূতাবাসের-সদস্য ও কম্যুনিটির শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।  

রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ শামীম আহসান তাঁর স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলা নববর্ষকে বাঙ্গালিদের জীবনে এক অনন্যসাধারন উৎসব হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী ছাপিয়ে এটি সকলের 'প্রাণের উৎসব'-এ পরিণত হয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, নববর্ষ উদযাপনের সাথে কবিগুরুর 'এসো হে বৈশাখ, এসো এসো' যেমন অপরিহার্য তেমনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'ও মোন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ' গানটি ছাড়া ঈদের আবহ তৈরি হয়না। রাষ্ট্রদূত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম শতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর ধারাবাহিকতায় তাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং বলেন যে বঙ্গবন্ধুই নিজ উদ্যোগে ১৯৭২ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম-কে কোলকাতা থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং পরবর্তীতে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়া হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রবীন্দ্র চর্চার বিকাশে কুষ্টিয়ার শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও নজরুলের সাহিত্য চর্চার জন্যে ময়মনসিংহের ত্রিশালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-কে বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান দুই স্তম্ভ এবং বিশ্ব-সাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মাঝে এই দুই মহান সাহিত্যিকের সাহিত্যসম্ভার পরিচিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের উপর জোর দেন।  

আলোচনা পর্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রোমে অবস্থিত বিশ্বখ্যাত La Sapienza University এর কয়েকজন অধ্যাপক (ফাবিও শালপি (Prof. Fabio Scialpi), অধ্যাপক সংযুক্তা দাশ গুপ্ত (Prof. Sanjukta Das Gupta) এবং অধ্যাপক নিমান সোবহান (Prof. Neeman Sobhan)। ইতালিতে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু লুমসা বিশ্ববিদ্যালয়ের (LUMSA University) অধ্যাপক ফ্রান্সেস্কো জানিনি (Prof. Dr. Francesco Zannini) বিশুদ্ধ বাংলায় জ্ঞানগর্ব  বক্তব্য প্রদান করেন যা সবাইকে মুগ্ধ করে। বক্তাগণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উপর তাদের গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন এবং বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশ্বব্যপী বিকাশের লক্ষ্যে বাংলা সাহিত্যের এই দুই মহান ব্যক্তিত্বের সাহিত্যকর্ম বিভিন্ন ভাষায় বিশ্বের কাছে তুলে ধরার উপর জোর দেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানে ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশ কম্যুনিটির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি পৌঁছে দিতে সকলের প্রতি আহবান জানান।     

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূতাবাস পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে 'এসো হে বৈশাখ এসো, এসো' গানটি পরিবেশিত হয় যা প্রশংসিত হয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম  রাজিব দেওয়ান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'প্রলয়োল্লাস' কবিতাটি আবৃত্তি করেন।  বিশিষ্ট প্রবাসী শিল্পীরা (মিজ্‌ সুস্মিতা সুলতানা এবং জনাব মোঃ তাহেরুল ইসলাম) তাদের সুললিত কন্ঠে নজরুল ও রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন এবং তবলায় সহযোগিতা করেন দূতাবাসের সদস্য জনাব দিপু অভি সাহা। সবশেষে, স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন 'সঞ্চারি সংগীতায়ন' এর পরিচালক ও সংগীত শিক্ষক মিজ্‌ সুস্মিতা সুলতানার নির্দেশনায় সংগঠনের দুই শিশু শিল্পীর (দিয়া পোদ্দার, দিপা পোদ্দার) ধারনকৃত একটি মনোজ্ঞ নৃত্য (ধিতাং ধিতাং বলে, মাদলে তাল দোলে ......) পরিবেশিত হয় যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।  প্রথম সচিব এ এস এম সায়েম, প্রথম সচিব মিজ্ সুফিয়া আক্তার এবং দূতাবাস সদস্য ফারহানা নাজনিন-এর অনবদ্য সঞ্চালনা অনুস্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ইতালি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ও বাংলাদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ কম্যুনিটির নেতৃবৃন্দ,  সাংবাদিক, ইতালিয়ান নাগরিক, দূতাবাসের সদস্যগণ ছাড়াও লা সাপিয়েনজা বিশ্ববিদ্যালয়, রোম এর বিদেশী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, কোভিড মহামারীর ভয়াবহতার প্রেক্ষিতে ইতালি সরকার কর্তৃক আরোপিত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধুমাত্র দূতাবাসের সদস্যদের উপস্থিতিতে সীমিত পরিসরে দূতাবাসে এবং অনলাইন প্লাটফর্ম ZOOM এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। একই কারণে দূতাবাস নববর্ষ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পূর্বে আয়োজন করতে পারেনি।

Image
Attachments
Publish Date
30/07/2021
Archieve Date
30/11/2021